এসি চালু থাকলে কুল্যান্ট লিক হয় কেন? এসি চালু থাকলে গাড়ির কুল্যান্ট লিক হতে পারে। কুল্যান্ট লিকের কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই আর্টিকেলে।

এসি চালু থাকলে কুল্যান্ট লিক হয় কেন?
বর্তমান যুগে গাড়ি চালকদের জন্য এসি একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। গাড়ি গরমের সময় শীতল রাখতে এসি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে অনেক সময় দেখা যায়, এসি চালু করার পর গাড়ির কুল্যান্ট লিক হতে শুরু করে। এই সমস্যা কেন হয় এবং এর সমাধান কী হতে পারে, তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. কুল্যান্ট কী এবং এর কাজ
কুল্যান্ট একধরনের তরল যা ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি মূলত পানি এবং অ্যান্টি-ফ্রিজের মিশ্রণ। কুল্যান্টের প্রধান কাজ হলো:
- ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া প্রতিরোধ করা।
- শীতল আবহাওয়ায় পানি জমে যাওয়া থেকে রক্ষা করা।
- ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করা।
কুল্যান্ট কি উইকিপিডিয়ায় আরও বিস্তারিত পড়ুন।
২. এসি ও কুল্যান্টের সংযোগ
অনেকেই মনে করেন এসি এবং কুল্যান্ট সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিষয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এসি সিস্টেমের সঠিক কার্যকারিতার জন্যও ইঞ্জিনের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা জরুরি। ইঞ্জিন গরম হলে এসির কম্প্রেসারে প্রভাব পড়ে, যা কুল্যান্টের মাধ্যমে ঠান্ডা হয়।
৩. এসি চালু থাকলে কুল্যান্ট লিক হওয়ার কারণ

- গ্যাসকেটের সমস্যা: গ্যাসকেট ইঞ্জিন এবং রেডিয়েটরের মধ্যে একটি সিলিং হিসাবে কাজ করে। এটি দুর্বল হয়ে গেলে কুল্যান্ট লিক হতে পারে।
- পাম্প বা পাইপের ক্ষতি: রেডিয়েটরের পাইপ বা পাম্পে লিক বা ছিদ্র হলে এসি চালুর সময় কুল্যান্ট বেরিয়ে যেতে পারে।
- রেডিয়েটরের ফাটল: গাড়ির রেডিয়েটর পুরনো বা অতিরিক্ত চাপের কারণে ফাটলে কুল্যান্ট বেরিয়ে যায়।
- কুল্যান্ট ওভারফ্লো: অতিরিক্ত কুল্যান্ট ব্যবহার করলে তা প্রয়োজনের বাইরে বেরিয়ে লিক সৃষ্টি করে।
- পুরনো কুল্যান্ট ব্যবহার:পুরনো কুল্যান্টে জমে থাকা ধুলো বা ময়লা রেডিয়েটরের ভেতরে জমে পাইপের লিক সৃষ্টি করতে পারে।
আরো পড়ুন: এসি রক্ষণাবেক্ষণের ২০টি কার্যকর টিপস
৪. কুল্যান্ট লিকের লক্ষণ
- রেডিয়েটরের নিচে তরল পড়া।
- ইঞ্জিন দ্রুত গরম হয়ে যাওয়া।
- এসি চালু করলে ইঞ্জিনের অস্বাভাবিক শব্দ।
- ড্যাশবোর্ডে Low Coolant সতর্কতা।
৫.কুল্যান্ট সমস্যার সমাধান
- নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ: রেডিয়েটর এবং এসি সিস্টেম নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে।
- লিক পরীক্ষা ও মেরামত: কোনো লিক থাকলে তা দ্রুত মেরামত করা উচিত। লিক সনাক্ত করতে স্পেশাল ইউভি ডাই ব্যবহার করা যায়।
- উচ্চ মানের কুল্যান্ট ব্যবহার: সস্তা বা নিম্নমানের কুল্যান্ট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ব্র্যান্ডেড কুল্যান্ট দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর।
- এক্সপার্ট পরামর্শ নেওয়া: কুল্যান্ট লিক বারবার হলে অভিজ্ঞ মেকানিকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
আরো পড়ুন: গাড়ির এসি ঠান্ডা না হওয়ার কারণ
৭. প্রশ্ন-উত্তর (FAQ)
প্রশ্ন ১: কুল্যান্ট লিকের জন্য এসি কী দায়ী?
উত্তর: এসি সরাসরি দায়ী নয়, তবে এসি চালুর সময় ইঞ্জিনে বাড়তি চাপ পড়লে কুল্যান্ট লিক হতে পারে।
প্রশ্ন ২: কতদিন পর পর কুল্যান্ট পরিবর্তন করা উচিত?
উত্তর: সাধারণত ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ কিলোমিটার পর কুল্যান্ট পরিবর্তন করা উচিত।
প্রশ্ন ৩: কুল্যান্ট লিক হলে কি গাড়ি চালানো নিরাপদ?
উত্তর: দীর্ঘসময় চালানো ঠিক নয়। এতে ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৬. উপসংহার
এসি চালু থাকলে কুল্যান্ট লিক হওয়ার সমস্যা একটি সাধারণ বিষয় হলেও এর কারণ ও সমাধান জানা থাকলে সহজেই এড়ানো যায়। ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও এসি সিস্টেমের কার্যকারিতা বজায় রাখতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
কুল্যান্ট লিক, এসি সমস্যার সমাধান, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, রেডিয়েটর লিক, ইঞ্জিন ঠান্ডা করার উপায়।